পান্তা ভাত খাওয়া কি ভাল?

পেট ফাঁপা এবং শরীরে অস্বস্তি নিয়ে ঘুম থেকে ওঠা সত্যিই খুব খারাপ লাগার মতো। এই কারণেই স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা দিনের শুরুটা হালকা ও প্রাণবন্ত রাখার জন্য সঠিক খাদ্যাভ্যাসের উপর জোর দেন। একটি সুস্থ সকালের মূল চাবিকাঠি হলো আপনার অন্ত্রের স্বাস্থ্য ভালো রাখা। আর এক্ষেত্রে পান্তা ভাত হতে পারে আপনার সেরা বন্ধু। সকালের নাস্তায় পান্তা ভাত খেলে সারাদিন আপনি থাকবেন সতেজ ও প্রাণবন্ত। এমনকি রোজায় ইফতার বা সাহরির খাদ্যতালিকাতেও যোগ করতে পারেন এই ঐতিহ্যবাহী খাবারটি।

পান্তা ভাত আসলে কী?

পান্তা ভাত বাঙালির কাছে নতুন কিছু নয়। এটি আমাদের সংস্কৃতির একটি অংশ। মূলত রাতের অবশিষ্ট ভাত পানিতে ভিজিয়ে রেখে পরের দিন সকালে খাওয়া হয়। গাঁজন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে পানিতে উপকারী ব্যাকটেরিয়া তৈরি হয়, যা পান্তা ভাতকে ভিটামিন, অ্যামাইনো অ্যাসিড, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং প্রদাহ-বিরোধী উপাদানে সমৃদ্ধ করে তোলে। পুষ্টিবিদরা এর সর্বোচ্চ উপকারিতা পেতে মাটির পাত্রে ভাত ভিজিয়ে রাখার পরামর্শ দেন।

কেন মাটির পাত্র ব্যবহার করা উচিত?

বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, মাটির পাত্রে এমন কিছু প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্য বিদ্যমান যা গাঁজন প্রক্রিয়াকে আরও উন্নত করে তোলে। এটি প্রাকৃতিকভাবে ঠান্ডা থাকার কারণে পানির তাপমাত্রাও নিয়ন্ত্রণে রাখে এবং pH স্তরের ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে। ফলে পান্তা ভাত আরও বেশি স্বাস্থ্যকর হয়ে ওঠে। এছাড়াও, মাটির পাত্র পান্তা ভাতের পানিতে ক্যালসিয়াম ও ম্যাগনেসিয়ামের মতো প্রয়োজনীয় খনিজ উপাদান যোগ করে, যা আমাদের সামগ্রিক স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত উপকারী।

পান্তা ভাতের স্বাস্থ্য উপকারিতা

১. অন্ত্রের প্রদাহ কমায়: পান্তা ভাতে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং প্রদাহ-বিরোধী উপাদান থাকে। এটি পেট ঠান্ডা রাখতে, প্রদাহ কমাতে এবং বুক জ্বালা ও অ্যাসিডিটির মতো সমস্যা প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে।

২. হজমে সহায়ক: পান্তা ভাত আমাদের অন্ত্রে উপকারী ব্যাকটেরিয়ার সংখ্যা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। এর ফলে হজমক্ষমতা বাড়ে এবং শরীরে পুষ্টির শোষণ ভালোভাবে হয়। এটি আমাদের বিপাক প্রক্রিয়াকেও উন্নত করে।

৩. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে: সুস্থ অন্ত্র আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থার সঙ্গে সরাসরি যুক্ত। পান্তা ভাত খাওয়ার ফলে অন্ত্রে ভালো ব্যাকটেরিয়ার বৃদ্ধি ঘটে, যা আমাদের শরীরের সামগ্রিক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে শক্তিশালী করে এবং বিভিন্ন রোগ জীবাণুর বিরুদ্ধে লড়াই করতে সাহায্য করে।